পরিদর্শনের আগে
প্রস্তুতি নিনঃ
যে কোন স্থান ভ্রমনের কথা উঠলেই প্রথমে আমাদের মাথায় আসে কী করতে বা দেখতে যাবো। আসলে ঐতিহাসিক স্থানে করার মতো তেমন
কিছু থাকে না । তবে জানার এবং ভাবার মতো অনেক কিছুই থাকে। তাই ইতিহাস-ঐতিহ্যের ব্যাপারে
আপনার আগ্রহ থাকতে হবে নচেৎ এ ধরনের ভ্রমন আপনার ভাল নাও লাগতে পারে।
-অনেক ধরনের ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। যেমনঃ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা, রাজবাড়ি, কেল্লা, যুদ্ধক্ষেত্র কিংবা ঐতিহাসিক কোন ঘটনার সাক্ষী এমন স্থান। আগে সিদ্ধান্ত নিন আপনি কোন ধরনের স্থান দেখতে
যেতে চান। যেমনঃ কোন এক বছর আপনি দেশের সবগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ঘুরে দেখতে পারেন।
-যে স্থানে যাবেন তার ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা হলেও জেনে নিন।
-কিভাবে যেতে হবে তা আগে থেকে জেনে নিতে পারলে ভাল।
-ব্যাক্তিগত ভ্রমনে যাবেন নাকি কোন গাইডেড ট্যুরে যাবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন।
বন্ধু বা পরিবার বিশেষত বাচ্চা-কাচ্চা সাথে থাকে সেভাবে ট্যুর প্লান করুন। বিশেষ করে
খাবার দাবারের ব্যাবস্থা করে নিন। কারন অধিকাংশ স্থানেই খাবারের ব্যাবস্থা থাকে না।
পরিদর্শনের উপযুক্ত
সময় নির্ধারণ করুনঃ
বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে সাধারণত বছরের নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে
থাকে। ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের সেটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তবে অবশ্যই যে কোন সময় আপনি ভ্রমনে বের হতে পারেন।
-যখনই আপনি ব্যাক্তিগত বা অফিসিয়াল কাজে কোন স্থানে যাচ্ছেন, দুই-এক দিন হাতে রাখুন
সেই স্থানের ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখার জন্য।
![]() |
| বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান |
কি করবঃ
-অধিকাংশ স্থানেই শুধু দেখার ব্যাবস্থা থাকে কিছু করার থাকে না। তবে কোন অনুষ্ঠান
চলছে এমন সময় গেলে তাতে অংশগ্রহন করতে পারেন।
-সুভেনির শপ থাকলে কিছু স্যুভেনির সংগ্রহ করতে পারেন।
-স্মৃতি হিসাবে কিছু ছবি তুলে রাখুন। ঐতিহাসিক স্থান কোন সেলফি
তোলার যায়গা নয়। ফুল, লতা-পাতার সাথে ছবি তোলার জন্য নিশ্চয় আপনি সেখানে জান নি।
-সেখানে কোন স্থাপনা বা বাগান থাকলে তা ঘুরে দেখতে পারেন।
যা আপনাকে হতাশ
করতে পারেঃ
ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন করার ব্যাপারে আপনার আগ্রহ খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন অনেকের কাছেই বোরিং মনে হয়। আর এ
কারনেই অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে যেমন জন সমাগম হয়, ঐতিহাসিক স্থানে তেমনটা দেখা
যায় না। এবং এর পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আগ্রহ থাকলে ঐতিহাসিক স্থান
ভ্রমনে আপনি যে অভিজ্ঞতা লাভ করবেন তা অতুলনীয়। আসলে জানার ব্যাপারে
আপনার দৃষ্টিভঙ্গি সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
আমাদের দেশের ঐতিহাসিক স্থানগুলো সঠিক ভাবে সংরক্ষিত হয়না।
এমন কি যে কোন তথ্য জানার জন্য ভাল গাইডেন্স ও থাকে না। তাই অনেক ক্ষেত্রেই আপনাকে
হতাশ হতে হবে। আসলে ইতিহাস সঠিকভাবে ডকুমেন্টেড করে না রাখা আমাদের জাতিগত
বৈশিষ্ট্য।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইতিহাস দর্শনঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন আপনার মধ্যে জাতীয়তার গৌরব বোধ তৈরি
করে, বাস্তবতাকে নতুন ভাবে ভাবতে সাহায্য করে। বিশেষত শিশু-কিশোরদের জন্য এ ধরনের ভ্রমন
মানসিক বিকাশে সহায়ক ।
আপনার সন্তানকে নিয়ে যান অতীতের কোন যুদ্ধ ক্ষেত্রে। কোন
বধ্য ভূমি বা গনকবর দর্শনে। যুদ্ধের কারন, ভয়াবহতা আর বীরত্ব গাথা কিংবা
হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতার মতো কঠিন বিষয়গুলো যাতে তারা বুঝে উঠতে পারে। ইতিহাসের কোন
ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে এমন স্থানে ঘুরে আসুন। ঠিক সেই সময় মানুষের মাঝে যে
উত্তেজনা, যে আবেগ কাজ করেছিল তা অনুভব করতে পারা প্রয়োজন আছে।
আমাদের দেশের হাজার বছরের ইতিহাস কে জানুন, ঐতিহাসিক স্থান
ভ্রমন করুন, জাতীয় গৌরবের অংশীদার হউন।


No comments:
Post a Comment